আমি কি এখন কিছুই পড়তে পারব না? পড়তে গেলেই মাথা ধরে যাবে? শব্দের ভেতরে প্রবেশাধিকার কি আমার হারালো? তাহলে কেন অক্ষরকে কিছু জ্যামিতিক আঁক ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছে না? তবে কি অসীমের সঙ্গে সামান্য যে-সূত্রে জুড়ে ছিলাম সেই সূত্রটুকু ছিঁড়ে গেল? নাড়িছেঁড়া যন্ত্রণা টের পাই এই প্রকাণ্ড রাত্রির এক প্রান্তে শুয়ে। কেউ যেন গায়ের কাঁথাটি সরিয়ে নিয়ে গেছে। নিজের ঘুমন্ত মুখ কখনও দেখিনি। গায়ের হারিয়ে যাওয়া কাঁথায় কোন রঙের সুতোয় কী নকশা ছিল, ভুলে গেছি। স্বপ্নে আলাদিন এসে বলেছিল, 'আমার জ্বিনটি তুমি ধার নেবে?' আমি প্রত্যাখ্যান করেছি, 'আমার তো সুপরিচিত সমুদ্র নেই, কোথায় পাড়ি দেব? তাছাড়া, জ্বিনও তো এক মখলুক, ওকে ওভাবে আটকে রেখো না, মুক্ত করে দাও, দেখো তুমিও মুক্তি পাবে কোনও এক কালে।' মর্জিনাকে বলেছি, মর্জিনা! তুমিও কি সুখী নও আবদুল্লার যা আছে? চোরের মোহর তুমি চুরি করে সুখ পাও? শাকান্ন তোমার দেশে এতই দুর্লভ? স্বপ্নে আমি দু'খানা দেশ আবিষ্কার করেছি। দুই দেশ শস্যে শস্যে ভরা। সকলেই কৃষিকাজ করে, সকলেই বস্ত্র বুনে তোলে, ধর্মগৃহ নেই তাই তাদের সকল গানে তাদেরই উল্লেখ। আমি তো রাতের এপার থেকে গেছি বিশিষ্ট অন্ধকার ঠেলে, প্রশ্ন করি, 'তোমাদের দেবদেবীরা কোথায়?' তারা বলে, 'এই দেশে মৃত্যুভয় নেই, ভয়েরও প্রয়াণ ঘটেছে, আমাদের উপাস্য এত দূরে আছে, ভুলে গেছি। এত কাছে আছে, ভুলে গেছি।'
জিয়া হক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Share. Comment. Subscribe