আমাকে নিয়ে চলো।
তুমি তাহলে যেতে চাও?
হ্যাঁ।
এই বাড়ি, শহর, রাতের সুন্দর খাবার, সাইকেলে ঘুরে বেড়ানো
আর ভালো লাগছে না?
আমি একবারও বলিনি আমার এসব ভালো লাগছে না।
তাহলে?
ভালো লাগা থেকে কোথাও চলে যেতে পারে না কেউ?
হ্যাঁ, নিশ্চয়ই পারে। কোনও কারণ ছাড়াই চলে যেতে চাও?
আমি ঘুরতে ভালোবাসি না, জায়গায় জায়গায় ঘুরে ঘুরে নানারকম
খাবার খাওয়ার লোভও আমার নেই, বরং পুনরাবৃত্তিই আমার প্রিয়, একটা বই একই জায়গায় আমি
সব সময় পড়ে থাকতে দেখতে চাই, তারপরও আমি এবার যেতে চাই।
কিন্তু যেখানে যাবে সেখান থেকেও তো একদিন পালিয়ে যেতে
ইচ্ছা করবে।
তখন পালাবো।
তাহলে গিয়ে কাজ কী?
তোমার চা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। গরম করে নিয়ে আসি। এইখানে বসে থেকো। কোথাও উঠে যেও না। যেভাবে বসে আছো সেইভাবে বসে থাকবে। চুল যেমন আছে তেমন থাকবে, হাত বুলিয়ে অন্যরকম করে দেবে না। তুমি আমার কেউ নও, অথচ তোমার কাছে আমার কত দাবি, তাই না?
আমি ঠাণ্ডা চা-ই খাবো। তুমি বসো। বলো, আমার কাছে এত দাবি
কেন তোমার?
গান শুনবে? একটা নতুন গান শিখেছি।
আগে উত্তর শুনবো। তারপর গান শুনবো।
জানালাটা খুলে দিই? মনে হয় মেঘ করেছে। মেঘলা আকাশ দেখতে
তুমি পছন্দ করো। করো না?
তুমি এড়িয়ে যাচ্ছো আমার প্রশ্ন যেটা আসলে তুমিই তুলেছিলে।
আমি তুলেছিলাম, আমিই চাপা দিয়ে দিচ্ছি। আর একে খুঁড়ে বের
করে এনো না। খুঁড়লে সব সময় গুপ্তধন পাওয়া যায় না, কঙ্কালও উঠে আসে।
আমার গুপ্তধন চাই না, কঙ্কালও চাই না। আমি শুধু প্রশ্নের
উত্তর চাই।
তোমাকে একটা গল্পের বই দেবো, সেখানে তোমার প্রশ্নের উত্তর
রয়েছে। আমি বলতে গেলে তেমন করে বলতে পারব না।
আমি তো বইয়ের কথা শুনতে চাই না। তোমার কথা শুনতে চাই।
তোমাকে একটা সিনেমা দেখাবো, সেখানে তোমার প্রশ্নের উত্তর
রয়েছে।
নিজের কথা বলে তোমার কিছু নেই? সব ধার করা?
কে কার কাছ থেকে ধার করেছে? আমি তাদের থেকে না তারা আমার
থেকে? সব ছবি, গল্প, গানেই তো আমি আছি, তুমিও আছো। নেই?
জানি না। আমার জানার কথাও নয়। কথা কি?
তেমনই তো কথা ছিল বলে জানতাম। কবে সংশোধন হল জানতে পারলাম
না কেন?
তুমি আমাকে সরল ভাবে চিন্তা করতে দিচ্ছো না।
সারল্য বলতে তুমি কী বোঝাতে চাও?
যা জটিল নয়।
জটিলতা কী?
তুমি জটিল। এখন নিজেকে বিচার করে দেখো জটিলতা কেমন।
মানে তুমি সরল। তাহলে নিজেকে বিচার করে বলো সরলতা কেমন।
আমার প্রশ্নটা শুধু হারিয়ে গেল। সেটা কি ঠিক হল?
জিয়া হক