বাংলা কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বাংলা কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সৌখিন লোকেরাও পড়ে দেখতে পারেন : প্রশান্ত হালদারের পাঁচটি কবিতা




ফ্যান চালিয়ে যে কোনো ভাবনার কাছে যেতে ভয় পাই
স্থিরতায় বিশ্বাস করিনি বলে ভর্ৎসিত ঘরে-বাইরে
শুভকামনার নামে নোংরামির শিকার হচ্ছি রোজ
ক্রমশ পরিবার ও রাষ্ট্রের মঙ্গলকর বারান্দায় ঝুঁকে পড়ছি
হয়ে উঠছি বিবৃতিদানের মাস্টার
যথারীতি অসুখ-বিষয়ক চর্চা চলতেই থাকে
আমিও অনুপ্রাসের ফাঁদে আটকে যুগ পার করে দিলাম
কিন্তু এসব কথায় তোমার কোনো ক্লান্তি নেই
তুমি তো রাষ্ট্রদূত


দেখে গিয়েছিলে
বিশাল বাড়ির ছোট্ট একটা ঘরের
লাগোয়া বাথরুমে বসে থাকতে, সিগারেট ধরিয়ে
তাও সমুদ্রে গিয়েছ
কাউকে বলোনি

তোমার খুনের নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে—
এই স্বপ্নের কথা যেন পাঁচ-কান না হয়

তবু এত এত সাবধানতা
দুঁদে গোয়েন্দার আতস কাচের নিচে ধরা পড়ে যাবে

তবে কি রহস্য বলে কিছু নেই

পাড়াতুতো ভ্যানস্ট্যান্ড জ্বলছে

খাঁ-খাঁ করছে গোটা ছাদ
রাস্তায় বিশাল ছায়ারা ওঁৎ পেতে আছে

আমরা হাঁটছি, ধরা পড়ছি
বেরিয়ে যাচ্ছি
আগামী ছায়ার পাহাড়ে চাপা পড়তে চেয়ে

বাঁদিকে কালীঘাট ব্রিজে সস্তা বেশ্যা আর
ডাইনে জেলখানা। আছি অটোর ভিতর
নজরে সারা-বাংলা কারা-কর্মীদের সংগঠন অফিস
দু-দুখানা-প্যান্টে বন্দী মিইয়ে যাওয়া মাংসল ছোরা নিয়ে
এগুচ্ছি অটোতে
সামনে আদালত। জানি, এর কোনো বিচার হবে না।


অশোকপ্রস্তাব


.................... 
ব্যথিত করোনি বলে আমি ওই ব্যথার 
পাশে পাশে নিজেকে দেখলাম 
নিজেকে দেখলাম দূর জ্যোতিষ্কের মৃত্যুশয্যার ধোঁয়ায় গর্জনে 
পড়ে যাওয়া উপকারী কেননা আরও কিছু অভিজ্ঞ হলে 
দশদিকে ঘর, প্রতিটি বাড়িই তো কবরের রূপ ধরে আছে 
গোলাপজলের ছিটা প্রতিটি চাদরে 
এই যে খুশবু-পরিবার, এই যে যথারীতি ফুলের প্রয়োগ 
তুমি একটু শিল্পী হলে আর 
আমি হই পণ্যবিজেতা 
ভয় পাওয়া অনৈতিক নয় কেননা স্নায়ুর সুস্থতা 
এক্ষেত্রে প্রমাণিত হল 
প্রমাণপত্র ভিন্ন ভালবাসা হয়েছে আংশিক 
বিকশিত হও আর উচ্চ থেকে মহল্লাকে দেখো 
বৃহৎ কাফন ছাড়া মতাদর্শ কিছু দেখা যাবে 
দেখা যাবে বহু বহু বাস, যার ছাদে শুয়ে আছে 
সেইসব ডুবোজাহাজেরা যারা ডুবেছিল ভেসে উঠবে ব'লে 
তারপর ডুবে গিয়েছিল 
খুশি যেহেতু ব্যাখ্যাকার নয়, নিজে তার যাত্রী আছিলাম 

জিয়া হক 

Lip locked : an urban death


দিন বুড়ো
..............
অন্ধকার বসো পাশে এসে
উপদ্রব আলোর আর শেয়ালের
উচ্চতম শাখাটির নাম ভালোবাসা
সব পথ নিজ নিজ ধর্মঘরে গেছে
শীত এসেছে
হেসে উঠবে পাখিদের শিশুখাদ্য, প্রবাসী
স্নেহের চুমুগুলো, ব্লিচিং পাউডার যত
আত্মীয়তা জমা ডিব্বাদের
চটকল, রুমাল কারখানা ডুবে যায়
উৎসবের চোখের প্রস্রাবে
এত লোক, এত নির্জনতা
এত নাচ, এত ভেঙে পড়া
কত ধান, কত টাকা চাল
এত চাল, এতই বাচাল
কে পারে এমন এক রম্য লিখে দিতে,
সুরভিত ভীতু সুর সমক্ষে আনিতে
যা বলবে,  শকুন - সংগীত থেকে
সাবধান হও পিতঃ
সন্তান ঢাকতে গিয়ে যে পিতা নগ্ন হয়েছে
কম্বল এই শৈত্যে প্রাপক তার দেহ
কেউ আর ঘুঁড়ি ওড়াবে না
কাগুজে স্বার্থে তাই আকাশও
দেখবে না কেউ
ছোট মেঘ আরও ছোট পরিজন নিয়ে
চলে যায় আলাদা আকাশে
কিছু আর অনিবার্য নয়, হে সঙ্গসুখ
চলেই তুমিও যেতে পারো, কেননা
শাহজাহান বোকা লোক ছিল — এ ভাষা
রাষ্ট্র হয়ে গেছে ;
আমিই মমতাজ আমার — এ ভাষ্য রাষ্ট্র করা হল
কী নষ্ট এই বিকেলের হাওয়া
সঙ্গী বদলে বড় চাপ দিয়ে থাকে
ও এক এমন ধুতুরা যা তুলসীর পোশাকে
আমারই মনে মনে নমস্য হয়েছে
চেনে না যারা গাছ, লোক, বইয়ের প্রকার
প্রতিবন্ধী তারা কি নয়?
তারাই কি তীর্থক্ষেত্র জমজমাট রাখে?
কোলে তুলে দেখ দু পেয়ে শিশুকে
কোলে নিয়ে দেখ কুকুরছানাকে
কী মনে হয়?
কাল থেকে দুধে জল দেবে?
সরিষার ভেতরে আর ভৌতিক মেশাবে?
সমস্ত ব্যাখ্যায় তাছাড়া
শৈশব আনা হবে কেন?
তারা কি টুকরো উনুন
সকলেই সেঁকে নেবে রুটি, হাত, ভাবমূর্তিগুলো?

ভালবাসা একটা ডিসেম্বর যার শীতসমূহ
ঔদাসীন্যে হারিয়ে গেছে কোনও
বিশ শতকের গ্রামধারে


জিয়া হক