কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

অপর্যাপ্ত গুচ্ছ কবিতা। পিয়াস মজিদ


 

মোটামুটি
________


তুমি ০১টা উইপিং উইলোর বাগান

কিন্তু কান্না তার গন্ধ ছড়ানোর আগেই

হাসি তার ছুরি ঝুলিয়ে যায় তোমার মুখে

তুমি তখন আশপাশে ঘন হওয়া

রঙের বারুদ জমা করো

কাচা কাঠ অপেক্ষায় থাকলেও

আগুনের যৌবন ফুরালে

বসে থাকাই বুড়ো হয় শুধু!



আছি
____


কাফকার লাশ থেকে
০১টা আগরবাতি
নিভে গিয়ে নদী
যার যা জ্বলার ছিল
কৌশলে পাচার করে
মেঘের ফুটপাথে
ক্লিভেজে দেখা গেলে
কান্না ও করতালি
তুমি সব গডব্লেসিং হাতিয়ে নিয়ে
পচা পানিতে খুঁজতে আছো
তাজা মাছের মঞ্জিল!

০২.

গালিবের গজলে অভিশপ্ত
কোনও মধ্যরাত
রতি থেকে ছেঁকে তুলতে চেয়ে
কয়েক ছটাক পেয়ার
তবু আমরাই বুঝেছি ভালো
কতটা গজলে গোসল করা
প্রতিটি শীৎকার!

০৩.

পৃথিবী চুপ করলে
শুরু হয় আমাদের ভাষা



চলাচল
______


গন্তব্য খুঁজি না

যতদিন আছি
রাস্তায় ঢেলে দিতে থাকি
চলাচলের রং

নিজে বিবিধ ক্ষুধা নিয়ে
রাস্তাকে দিয়ে গেছি
আমার সফরের স্বাদ

আমাকে নিয়ে চলো। গদ্য। জিয়া হক

 


আমাকে নিয়ে চলো।

তুমি তাহলে যেতে চাও?

হ্যাঁ।

এই বাড়ি, শহর, রাতের সুন্দর খাবার, সাইকেলে ঘুরে বেড়ানো আর ভালো লাগছে না?

আমি একবারও বলিনি আমার এসব ভালো লাগছে না।

তাহলে?

ভালো লাগা থেকে কোথাও চলে যেতে পারে না কেউ?

হ্যাঁ, নিশ্চয়ই পারে। কোনও কারণ ছাড়াই চলে যেতে চাও?

আমি ঘুরতে ভালোবাসি না, জায়গায় জায়গায় ঘুরে ঘুরে নানারকম খাবার খাওয়ার লোভও আমার নেই, বরং পুনরাবৃত্তিই আমার প্রিয়, একটা বই একই জায়গায় আমি সব সময় পড়ে থাকতে দেখতে চাই, তারপরও আমি এবার যেতে চাই।

কিন্তু যেখানে যাবে সেখান থেকেও তো একদিন পালিয়ে যেতে ইচ্ছা করবে।

তখন পালাবো।

তাহলে গিয়ে কাজ কী?

তোমার চা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। গরম করে নিয়ে আসি। এইখানে বসে থেকো। কোথাও উঠে যেও না। যেভাবে বসে আছো সেইভাবে বসে থাকবে। চুল যেমন আছে তেমন থাকবে, হাত বুলিয়ে অন্যরকম করে দেবে না। তুমি আমার কেউ নও, অথচ তোমার কাছে আমার কত দাবি, তাই না?


আমি ঠাণ্ডা চা-ই খাবো। তুমি বসো। বলো, আমার কাছে এত দাবি কেন তোমার?

গান শুনবে? একটা নতুন গান শিখেছি।

আগে উত্তর শুনবো। তারপর গান শুনবো।

জানালাটা খুলে দিই? মনে হয় মেঘ করেছে। মেঘলা আকাশ দেখতে তুমি পছন্দ করো। করো না?

তুমি এড়িয়ে যাচ্ছো আমার প্রশ্ন যেটা আসলে তুমিই তুলেছিলে।

আমি তুলেছিলাম, আমিই চাপা দিয়ে দিচ্ছি। আর একে খুঁড়ে বের করে এনো না। খুঁড়লে সব সময় গুপ্তধন পাওয়া যায় না, কঙ্কালও উঠে আসে।

আমার গুপ্তধন চাই না, কঙ্কালও চাই না। আমি শুধু প্রশ্নের উত্তর চাই।

তোমাকে একটা গল্পের বই দেবো, সেখানে তোমার প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। আমি বলতে গেলে তেমন করে বলতে পারব না।

আমি তো বইয়ের কথা শুনতে চাই না। তোমার কথা শুনতে চাই।

তোমাকে একটা সিনেমা দেখাবো, সেখানে তোমার প্রশ্নের উত্তর রয়েছে।

নিজের কথা বলে তোমার কিছু নেই? সব ধার করা?

কে কার কাছ থেকে ধার করেছে? আমি তাদের থেকে না তারা আমার থেকে? সব ছবি, গল্প, গানেই তো আমি আছি, তুমিও আছো। নেই?

জানি না। আমার জানার কথাও নয়। কথা কি?

তেমনই তো কথা ছিল বলে জানতাম। কবে সংশোধন হল জানতে পারলাম না কেন?

তুমি আমাকে সরল ভাবে চিন্তা করতে দিচ্ছো না।

সারল্য বলতে তুমি কী বোঝাতে চাও?

যা জটিল নয়।

জটিলতা কী?

তুমি জটিল। এখন নিজেকে বিচার করে দেখো জটিলতা কেমন।

মানে তুমি সরল। তাহলে নিজেকে বিচার করে বলো সরলতা কেমন।

আমার প্রশ্নটা শুধু হারিয়ে গেল। সেটা কি ঠিক হল?


জিয়া হক 

 


আমি এক শিরাফাটা নক্ষত্র : অংশুমানের গুচ্ছ কবিতা

 
কিছুতেই তেমন মনখারাপ হচ্ছে না 
কুয়াশায় কিছুদূর নেমে ঘোর 
কষ্টের থেকে ছিটকে আসি 
দেহ অনুভব শুধু জল ফ্লেশ তন্তু 

ডুবতে নাও কংক্রিট ভেঙে 
স্বপ্নের কসমস নিয়ে ডুবতে দাও 
কালো কোনো নদী তোমার কণ্ঠস্বর 
আমি এক শিরাফাটা নক্ষত্র 
নিস্তব্ধ চিৎকারে শরীর টানটান 
কিছুতেই শোকাস্তব্ধ হচ্ছি না 
পূর্ণগ্রাসের আগেই ঝলসে ওঠে 
অশ্লীল সিলভার লাইনিং

 
খুব অশরীরী রেখার রাক্ষস 
নেশায় ভাংচুর হয়ে আছে চোখের জানালা 
তোমাকে টুকরো ছাড়া দেখিনি কোনোদিন 
কোনদিকে যাব? যা কিছু ঘটে গেছে 
তাদের সুযোগ নেই আর 
অনবরত খেয়ে ফেলি ছায়ার ক্যাপসুল মায়ার 
দ্রাব্যতা 
যা কিছু চলে গেছে তা সরল নয় 
কিছুই হওয়া হয়নি 
না বৃক্ষ না অস্তাচল 
না অসৎ না অঘোর গোঙানির কংক্রিট

 
যৌনকল্পনা যৌনস্বপ্নের ভিতর ভিতর 
তুমি আছো ইলেকট্রিক পাখনার 
মাছের মতো 
তলপেটে সাঁতার দেয় বিঘ্নিত সিগন্যাল 
আর্দ্র মেঘের থেকে আমি 
দুধের বাসনা করি কবির আদব-কায়দায় 
না জানা ভাষার কথা ভাবি 
সময়ের উপর শ্যাওলা 
সরে না প্রেমের মত 
মরে না বঁড়শির আঘাত নিয়ে ঘাই মারে ঘুম 
সরোবরে 
শিশিরের শব্দে জেগে ওঠে শিশ্ন 
জন্মশোক কিছুটা হাল্কা হয় জান্তব ফুল ফোটে

 
ভোরের লোটাস 
ডুব দিয়ে ছিঁড়ে নেয় সহজাত পাপ 
পৌঁছতে চায় নখ তোমার ত্বক অবধি 
চার আঙুল দাস্তানের কোটরে 
পাখি ঝাপটায় 
এসব তোমায় দিলে কিছুটা নৃশংসতা কমতো 
কস্তূরী আকাশ থেকে ঠিকরে যেত লাল 
লেখা যেত কাঙ্ক্ষিত উপন্যাস 
ক্লীবের সাথে প্রণয় 
সংগঠিত নিরুচ্চার এক বৃষ্টি 
উল্কা উল্কা পারফিউম 
বিবর্ণ ব্যাভিচার 

ফেসবুকে অংশুমান  : https://www.facebook.com/ansumaniac

সঙ্গে সঙ্গে সাথে : জিয়া হক



…………………...............................................
পানার পুকুরে এই সবই ঝুঁকে পড়েছে।
ঝুঁকে পড়েছে কেননা বড়ো ভার।
ভার বইবার দেহখানি পুষ্টি পায়নি তাই
রাষ্ট্র করে দেয়, এখানে খাদ্য আছে আর আছে
কল্যাণকামী ছায়াভর্তি জল।
এখানে মানুষের দুইখানি পা, কৃষিকাজ করে বলে
এদেরকে কেউ মেধাবী বলে গণ্য করে না,
এইখানে চোখগুলি এত নুন ভরা, সামান্যতমতেই ঝরে পড়ে।  
ইঁটের বাড়িগুলি শ্রাদ্ধে বামুনের শ্রদ্ধার্ঘের গামছার মতো
আলো রাখলেই বেরিয়ে পড়ে
সেই আলো চাঁদের আলোর সাথে দেখা করতে চায়
তারা চায় স্থল ও শূন্যের মধ্যে যে মালপত্র আছে তার
গায়ে গাভীর দুধের মতো পুষ্টি রেখে যেতে


চিত্র : মনেঁ

দিন যায় বর্ষকালাধিক : জিয়া হক


আমার চিন্তা জটপাকানো উলের মতো গড়াতে গড়াতে নিম্নগগনের দিকে শূন্য-ঝাঁকা মনোহারি দ্রব্য বিক্রেতা হল।
৩ দিন পৃথিবীর মতো আর গ্রহ নেই, ৪ দিন এ আমি কোথায় এলাম। ৭ দিন আকাশে কুসুম, বাকি সাতে কুসুম আসে না।
মাসে মাসে জন্মদিন হয়, প্রতি মাসে বৃদ্ধ হয়ে যাই।
দেখে রাখি কোথায় সমাধি, সেখানেই বাড়ি বসে যায়।
১ সাল রাত্রি প্রেমোদ্ভব, ১ সাল ভানু দিবাকর।
ছেড়ে গেল দশকের অটো, ধরে থাকি হাজার হাতল



বিশ্বনাথ পুরকাইতের চারটি কবিতা


১।
পোকাদের বাসস্থান দেখে আসি চলো, মাথা গুঁজে
কোথায় চলেছে, দু-একটা সেলাই ছাড়া এ বছর কাজ নেই,
মেজদার শালিটারও বিয়ে হয়ে গেল।

বজ্রসম্ভাষিত পাখি, মাছ, গবাদি পশুর দল
গোধূলিতে মাঠে ছিল যারা তাদের খবর নাও;

মানব জীবন বড় দায়, কীটপতঙ্গের বাসাও
চিনে রাখতে হয়।


.২।
তোমরা নদীর পাড়ে খেলা কর, হাসাহাসি কর
হাঙর-কুমীর দেখে; বুকের পাটা হে তোমাদের।
আমার ভাইও ছিল ডাকা-বুকো, চাঁদ দেখে, ভূত
দেখে, বাঁশবন ডুবন্ত জাহাজ দেখে
মাঝরাতে ফিরে আসত বাড়ি।

আমি অতো বীর নই বাবা, ঘরে থাকি,
মাঝে মাঝে ভাইকেই দেখি উড়ে যাচ্ছে দ্রুতগামী
তারাদের আলো মাথায় ঝিলিক মারে
সোনালি-রূপালি মাছ তোমাদের নদীতে যেমন


৩।
ঊর্বশীর দাঁত দেখে আমিও হেসেছি
যদিও নাচেন তিনি ভালো
রাজা নন, সেনাপতি নন, রানিমার মন ছিল
তবলা বাদকে; তিনিই দলের অছি।

বিশ্ববন্ধু অপেরার স্মৃতি এভাবেই ফিরে আসে,
মাথার ভিতর হুহু করে গান, রমণী আহ্লাদ;
তোমাকে দেখাতে চাই মাঝিভাই তুমিই মালিক
নদী ও নৌকার। রাজনীতি ছাড়া বলো
দেশে আর কী কী আছে? পারাপার কেন
এত হিম হয়ে এল?


৪।
এবার গোসাবা যাব, প্রিয়তোষ ভাই
নৌকা লাগাও ক্যানিং-এর ঘাটে,
ভূমিহীন দেবতারা ভুল ছদ্মবেশে এদিকেও ঘোরাঘুরি
করছেন দেখি; তুমি বল, ওনাদের সঙ্গে নেওয়া
সুবিধার হবে? ওনারা কি সাঁতার জানেন?

বাতাসে কমলা রঙ, মেঘ এল অসময়ে, দূর্ভাগা স্বজন
যেদিকে ঝড়ের রাত সেদিকেই কেন যেতে চাও?

গোসাবা অনেক দূর? প্রিয়তোষ, দিনে
দিনে ফিরে আসা যাবে?

কমদামী বাজার : জিয়া হকের দুইটি কবিতা


প্রথম
প্রয়োজন না হলে জাতির জন্যে লেখা গান কে আর সময় ব্যয় ক'রে শোনে

তার সুর আরোপিত, মনে হয় কেউ বলে, দেশের বিভিন্ন চার কোণে

আমাদের দলের ভেতরে

লৌকিকতার থেকে লোক মুছে গেছে

যাদের ভাসার ঢং
        ঘৃণা করেছিল

বীরখালি গ্রামে শুধু তাহাদের ছায়া পড়ে আছে

দ্বিতীয়
আমি, মনে হয়, গতিপ্রকৃতির নীচে নেমে গেছি
নীচে শুধু আমি ব'লে আমার মতন গতিপ্রকৃতির
কিছুজন থাকে।
যার যৌবন আসে, কাছে, দূরে, ছেড়ে চলে যায়
বালিশে মাথা দিয়ে না শুলে বালিশ ঠাণ্ডা হয়ে থাকে
পুকুর কাটার জন্যে পুকুরে নেমেছি। সেটা নীচে নামার
মতো ভীতি। আমি পেয়েছি। মানুষদের কাজে আসে ব'লে
মাছেদের, মাছিদের, কোনও কাজেই লাগে না এই জল। মাছেরা
অমূলক কথা কম বলে, ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও তারা জেগে থাকে
মানুষের চেয়ে বেশিক্ষণ তাদের চোখ খোলা আছে। আমি বলি--
ওই ঘাটে বসা ঘষে রাখা রাত্রির ডিশখোলাদের
ব্যবহৃত হয় আর ব্যবহার করা মিলে সমাজের গতিপ্রকৃতির
নীচে নেমে বহু দেখি ওপর ব'লে কিছু নেই; সেখানে রাতের গায়ে
মানুষের কমদামী বাজার বসেছে;
জড়ুলের ঘষামাজা দেখে দেখে মাছের মতন চোখ
যাদের অসংখ্য খুলে গেছে,
আমি যাদবপুরে অনেককে দেখেছি, সার্কাসে কেউ কেউ ছিল
প্রতিভাপূর্ণ ব'লে পাশ কেটে সাধারণতের মধ্যে গেছি
সকলের কান আমি নীচ থেকে চিনতে পেরেছি
অ-নীচু, অ-উঁচুর তলা দিয়ে নিম্ন চলে যায়, চলাচল উচ্চ ক'রে থাকে
যাকে আমি মান্যতা দিয়েছি
হয় নম্রতাকে ভালোবাসে ব'লে কখনও সে নীচ হয় 


চিত্র : উইলিয়ম ব্লেক


বন্দীশালার ছড়া : এপ্রিল ২০২০


আলো আসে বঙ্গবিদ্যা, অ-পূর্বের জাফরি পথ ধরে
আমার কল্যাণ হয় বন্ধুবৃত্তে, যদিও তা কাল্পনিক স্তরে
বিদ্যা প্রাঞ্জল তাই বিদ্যাধরী তীর
ভুল মন্ত্র, ভুল কন্যা করেছেন অস্থির—
নাটকীয় যত ফুল
তুলে তুলে দেখি, তুলে তুলে দেখি
                         কতদূর নির্ভুল
বিদ্যা অল্প ব'লে
প্রজাপতি শুধু ঘুরে যায় আর প্রস্তাব যায় চলে
কাদের প্রস্তাবনা?
চিঠিতে জানাব, দুধ ফুটে ওঠে, আপাতত ভাববো না
জানো কি পত্র-রীতি?
প্রিয় বন্ধুতে শুরু আর জেনো শেষে আমাদের প্রীতি
যায় না এভাবে সুর?
যন্ত্র, বাদ্য, ব্যাকরণ ছাড়া যাবে যে অন্তঃপুর—
জাল বিজ্ঞান মতে
ভালোবাসা এক অপরাধ যার সমাপ্তি নাক ক্ষতে

জিয়া হক
চিত্রঋণ : হরিশ মণ্ডল

তার নামে বিদ্যালয় হবে : জিয়া হক


ভুলেই গিয়েছিলাম দিন আসছে ধীরে, রাত্রি দূরে নয়,
মাঠে মাঠে গাভীর পায়ের ছাপে জল ভরা আছে, আত্মজীবনীর সটীক সংলাপ ওই রাত্রিচরাচর জুড়ে
বেছানো রয়েছে,
বাগদী বুড়ির মতো তুলে আনতে হবে চুবড়ি ভর্তি করে, পেহচান কৌন বলে চোখ চেপে ধরে আমার অতীত,
কে ওই অনুল্লেখ্য লোক, পাতা খোঁজে জঙ্গলে জঙ্গলে,
উলঙ্গ তাই পোশাক বানাবে,
সে একটা নদীর মালিক,
এইমাত্র খনিজের জন্ম দিয়ে এলো, তার হাতে মহিলার খোঁপার উল্লাস অথচ চুম্বনরহিত,
প্রত্যাখ্যান পেয়ে পেয়ে সে আজ ব্রোঞ্জের ঝুরি হয়ে গেছে, শিশুর দোলনা হয়ে জীবন কাটায় এক প্রতিবেশী গ্রামে, পেহচান কৌন বলে কেউ তার পিছুও ডাকে না,
পেহচান কৌন বলে সে শুধু সময়ের চোখ চেপে ধরে।


অশোকপ্রস্তাব


.................... 
ব্যথিত করোনি বলে আমি ওই ব্যথার 
পাশে পাশে নিজেকে দেখলাম 
নিজেকে দেখলাম দূর জ্যোতিষ্কের মৃত্যুশয্যার ধোঁয়ায় গর্জনে 
পড়ে যাওয়া উপকারী কেননা আরও কিছু অভিজ্ঞ হলে 
দশদিকে ঘর, প্রতিটি বাড়িই তো কবরের রূপ ধরে আছে 
গোলাপজলের ছিটা প্রতিটি চাদরে 
এই যে খুশবু-পরিবার, এই যে যথারীতি ফুলের প্রয়োগ 
তুমি একটু শিল্পী হলে আর 
আমি হই পণ্যবিজেতা 
ভয় পাওয়া অনৈতিক নয় কেননা স্নায়ুর সুস্থতা 
এক্ষেত্রে প্রমাণিত হল 
প্রমাণপত্র ভিন্ন ভালবাসা হয়েছে আংশিক 
বিকশিত হও আর উচ্চ থেকে মহল্লাকে দেখো 
বৃহৎ কাফন ছাড়া মতাদর্শ কিছু দেখা যাবে 
দেখা যাবে বহু বহু বাস, যার ছাদে শুয়ে আছে 
সেইসব ডুবোজাহাজেরা যারা ডুবেছিল ভেসে উঠবে ব'লে 
তারপর ডুবে গিয়েছিল 
খুশি যেহেতু ব্যাখ্যাকার নয়, নিজে তার যাত্রী আছিলাম 

জিয়া হক 

ক্যাটরিনা সলমনের দেশ


ও সভ্যতার কাহানি
.............
যেখানে সবাই ক্যাটরিনা কাইফ, সেই দেশে
আমি যেতে চাই না। আস্তাকুড়়ে, রেলগেটে, পান দোকানে, সবজায়গায় কাইফ —এ অস্বাস্থ্যকর।
কাইফরা থাকবেন মগডালে, তাকে পেড়ে আনবার জন্য প্রাণান্তকর প্রয়াস করবে সভ্যতা —এমত দৃশ্যই মনকে শুশ্রূষা দেয়।
নগরপিতা বসবেন ছোটকচি কাইফ নগরবালিকাদের নিয়ে। তিনি সলমন খানেদের পাঠ দেবেন।
সভ্যতা এমন।

জিয়া হক