প্রতিশ্রুতি ও সহবাস


ভালোবাসা। সব সমাধান করে মুহূর্তে। কী সমাধানযোগ্য আর কোনটা অসমাধেয়? যেখানে 'বিকার' রয়েছে সামান্যও, তার মীমাংসা। নির্বিকার বলে হয় কি কিছু? আসলে ভালোবাসা কোথাও বিকৃতি দেখে না। তার সব সুন্দর। তার কাছে সুন্দর সবটুকু। ফুল তার কাছে ফুল তো বটেই, কাঁটাও তার কাছে ওই ফুলের সৌন্দর্যের বর্ধিত অংশ। যদি কাঁটা বিঁধে যায় হাতে? রক্তপতন হয় যদি? তাহলে? তাহলেও সেই রক্তে অসূয়া নেই, নেই সহিংসাত্মক মনোবেদনা। উপত্যকা-জোড়া ঘৃনা ও ঘৃন্যতার ভেতর যে রূহ সচল রাখে জনজীবন তা-ই ভালোবাসা। এখন প্রশ্ন হল, ভালোবাসা কী ও কেন, কীভাবে ও কেমন তা অনেকেই জানে, তারপরও কথা কেন এত? প্রেম কি কম পড়িয়াছ‌ে? পার্কে রেস্তোরাঁয় এত এত 'প্রেম', হৃদয়-চিহ্ন ভরা ইমোটিকনরাজি, অপ্রতিশ্রুত সহবাস —তারপরও? কোথাও কি বিপদঘন্টি বেজে চলেনি অজ্ঞাতসারে? মন জানে, মনই জানে। এমন কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে যাদের জ্বর আসে ঘন ঘন। অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসার দরকার হয়। অথচ তারা নাচতে বাধ্য হয় জমায়েতে। আসরে। যে নাচে তার প্রাপ্য ব্যথা আর যে নাচায় তার পাওনা মুদ্রা, হাততালি, কেয়াবাত জনাব। ভালোবাসা এখন, হ্যাঁ এখনই, সেই প্রাণীটি। পড়ে থাকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি, রাবার ও লুব্রিক্যান্ট।

ভালোবাসাহীন মূল্যবোধের অস্তিত্ব আছে? যদি দেশকে ভালো না বাসা হয়, যদি দেশবাসীকে ভালোবাসা না হয়, যদি পৃথিবীর প্রতি না থাকে ভালোবাসা, মানুষের জন্য ভালোবাসা রাখা না থাকে যদি, তাহলে কেমন হয়? তাহলে প্রতিটি মানুষই হয়ে থাকে সুপ্ত ক্ষেপণ-উদগ্রীব সোরা যাকে একটি চিত্র, একটি বাক্যের কণা বিস্ফারে নিয়ে যেতে পারে। শান্তি যেমন একটি মানসিক চুক্তি, ভালোবাসা তা কিন্তু নয়। এ স্বতঃপ্রণোদনাময়। এ আসে ;ডেকে আনতে হয় না একে। ঘৃনা তাই ছড়ানো সহজ, কিন্তু ভালোবাসা? তাকে ছড়িয়ে দিলেই অঙ্কুরোদগম হয় না। এ জাগে ; একে জাগাতে হয় না। তবে চাইলেই সে জাগে না —আসে না। তার জন্য আধারকে প্রস্তুত করে রাখতে হয়। আমাদের রাষ্ট্র কি প্রস্তুত? ভালোবাসার এত এত ঐতিহ্য নাকি আমাদের ইতিহাসে। তাহলে কেন ধর্ম'পরিচয়ের নিরিখে কোতল হয়ে যায় কেউ? লিঙ্গ'পরিচয়ে বলাৎকার হয়ে যায় কেন একজন? বিত্ত'পরিচয়ে বিচ্ছিন্নতা বোধে রোজ আরও প্রান্তিক হয়ে ওঠে কেন কেউ? আমাদের ইতিহাসে ইসলামি শাসনই তো কেবল রক্তপাতের কথা বলে, এ অন্ধকার। আর কোথাও, কোনোখানে লাল চোখ, রক্ত নেই তো? বাকি সবটুকু কেবলই আলো আর আলো তো? তাদের আগে ও পরে? অতিথি আমাদের ঈশ্বর-সমগোত্রজ। এ-ই তো ভালোবাসা। এখন আঘাতের আগে প্রশ্ন করে নেওয়া হয় নিশ্চয়ই, কে অতিথি আর কে অনুপ্রবেশকারী। এই সুচিন্তিত ভালোবাসা, এই সু-নির্দিষ্ট ভালোবাসা, এই সু-বিশেষ ভালোবাসা বড় বিপদ-জনক।

অ-সভ্যেরা প্রেম বলতে বোঝে শরীর। সেখানে কুসুমের মন নাই। সভ্য মানুষ প্রেম বলতে কয়েকটি প্রশ্ন বোঝে —কাকে প্রেম, তার আধারসম্বলিত পরিচয় পত্র কোথায়, কতদূর প্রেম, কেনই বা প্রেম? এ প্রেম নির্বাচিত। এ প্রেম রেজিমেন্টেড। সে শুধু শরীর নয়, বোঝে পূর্ণত ও নিঃশর্ত অধিকার। এই প্রেম যেহেতু অভিনয়কলার নিকটবর্তী, তাই এই প্রেম বিজ্ঞাপনের।  এই প্রেমে নেই প্রেম, বিবাহ, দায়বোধ : যা আছে তা হল সহবাস ও প্রতিশ্রুতি। যদিও 'বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস' বিষয়টি সোনার পাথরবাটির মতো। একজন নিজেকে  'ভোগ্য পণ্য' ভাবছে শুরুতেই। বিনিময় মূল্য কী? না যৌনসম্মতি। তাছাড়া, তাকে কে বলে দিয়েছে যে একজনের সঙ্গে যৌনতা করলে অন্য কাউকে বিয়ের অধিকার সে হারিয়ে ফেলে? কুমারীত্বকে কি সে মূলধন ভাবে নাকি? এখানে আরেকটি তর্ক রয়েছে। যে-লোক, যে-সমাজ, যে-রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, তার সঙ্গে সহাবস্থান করবে কীভাবে একজন? সে তো প্রত্যাখ্যানেরই যোগ্য।

আমাদের প্রেমিকসত্তাটিকে আত্মপ্রেমে মগ্ন করে রেখেছি আমরা। সে যত নিজেকে ভালোবাসতে যাচ্ছে ততই সে বিবিধের কাছে ঘৃণ্য হয়ে উঠছে অগোচরে। সে যতই নিজের মধ্যে ডুব দিতে যায় ততই তার বিপুল তুচ্ছতা প্রকাশিত হয়ে পড়ে। মুশকিল হল, এই স্ব-প্রেমীটি নির্লোভী নয়। তার একটা ভাবমূর্তির প্রশ্ন আছে। সে রাতের গোপনে বৃক্ষ-হন্তারক আর দিনের প্রকাশ্যে বৃক্ষপ্রেমী সেজে থাকতে চায়। সে প্রকাশ্যে নিরামিষাশী আর গোপনে মাংস ছাড়া কিছু গ্রহণ করে না। এরাও ভালোবাসে কাউকে, ঘৃণাও করে এরা কাউকে। এই ঘেন্না ও ভালোবাসার রূপ কিন্তু সরল একরৈখিক নয়। এরাই সাম্প্রতিকে নেতৃত্বে। এরাই এখন পথপ্রদর্শক। এরাই নৈয়ায়িক। ফলত সমস্ত 'ন্যায়', সব 'পথ' এখন বিপদসঙ্কুল। অন্ধকার বিপথগামী।

জিয়া হক

বিমুদ্রাকরণ


.................
শান্তি এক ধরনের চুক্তি। তাবারুক খাঁ বলল।
তাবারুক খাঁর বয়স একত্রিশ। পান খেতে ভালোবাসে। তার জামায় পানের পিক লেগে থাকে সব সময়।
যদি তুমি মনে করো শান্তি আর সহ্য হচ্ছে না, সেদিনই তুমি চুক্তিটা ভেঙে ফেলতে পারো। অশান্তিতে থাকার অন্তত দেড়শো খানা পথ তোমার সামনে খোলা।
আমি খুবই চিন্তিত মুখে তার কথা শুনছি কেননা সবে সবে আমার শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে।
তাবারুক খাঁ এখন আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আর পান চিবোচ্ছে। পানে সে সুরভি জর্দা খায়। নামে জর্দা, সুরভি আসলে এক ধরনের সুবাস। তাবারুক আসলে নেশা করে না। নেশা কী জিনিস সেটা বোঝার চেষ্টা করে।

আমি সেদিন একটা চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। পান করছিলাম বলা উচিত। সে যাকগে। চা-টা বড় সুন্দর। খেতে খেতে আমার মায়ের হাতের চায়ের কথা মনে পড়ে গেল।
তাবারুক বলে চলেছে।

আমার মা চিরকাল ভাবত আমি কিছু একটা অঘটন ঘটাবোই। হয় কোনো মেয়েকে নিয়ে পালাবো, হয় কাউকে রেপ করব, নয় তো তিনটে বিয়ে করবই।
তাবারুক মুচকি হাসল।

সব মেয়েঘটিত ব্যাপার—দেখতে পেলে তো? আসলে হয়েছিল কি, আমার মা একবার আমাকে হস্তমৈথুন করতে দেখে ফেলেছিল। তারপর থেকেই মা এই সব ভাবত। কিন্তু দেখো, আমার বয়স এই তিরিশ বছর সাত মাস হল, আমি কাউকে নিয়ে এখনও পালাইনি, কাউকে এখনও বলাৎকার করিনি আর বিয়ে? দেখতেই তো পাচ্ছো ভাই —তিনটে তো দূর, একজনকেও জোটাতে পারিনি।
বলেই তাবারুক পানের পিক ফেলল মেটে লাল। খানিকটা তার জামায় এসে পড়ল।

তা যা বলছিলাম, মায়ের কথা মনে উঠতেই আমার চায়ের শান্তিটা আর সহ্য হল না। দিলাম গরম চা একজনের উরুতে ঢেলে।
কপাল মন্দ হলে পরিকল্পনা কাজ করে না।
 আমাকে মারধোরের বদলে সে লোক আরো সহানুভূতি দেখিয়ে বলল, দাদা, আপনার হাত পুড়ে যায়নি তো?
কিছু ভালো লোকের থাকায় পৃথিবীটা একেবারে থাকার অযোগ্য হয়ে উঠছে দিন দিন।
তাবারুক খাঁর মনের উপর খুব চাপ পড়েছে বোঝা যাচ্ছে। তার মনটা খুব খারাপ।
পানটা থুঃ করে ফেলে দিয়ে বলল, কী আর বলি তোমাকে?
আমি সকৌতূহলে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছি দেখে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে বলল, শান্তিতে বেশিদিন থাকতে নেই। তুমি শান্তিতে আছো মানে তোমার জীবনের স্ট্রাগল শেষ। একটা স্ট্রাগলহীন জীবন —ছি ছি ছি ছি।
তাকে দেখে মনে হল, সত্যি শান্তি একটা অশ্লীল জিনিস। শান্তিতে থাকা একটা অপরাধ।

তিন মাস। তিন মাস শান্তিতে থাকার পর ভাবলাম কিছু একটা করা দরকার। এভাবে জীবন চলে না। তা করলাম কী, পাড়ার মসজিদে চাঁদা দিতাম। মাসিক দশ টাকা। ইমাম সাহেবকে খানা দিতাম মাসে একদিন। তো এক জুম্মাবারে মসজিদে ঘোষণা দিলাম যে আমি আর মসজিদে চাঁদা দেব না, মৌলানাকে খাওয়াতেও পারব না।
তাবারুক খাঁ থামল।

দেখলাম, একটা দল আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠেছে। খুব শান্তি লাগল। এটাই তো চেয়েছিলাম। একধাপ এগিয়ে গিয়ে বললাম, যে চাঁদা চাইতে যাবে তাকেই ঠ্যাঙাবো। এতে করে আরো কিছু লোক ক্ষেপে গেল। আমার যে কী আনন্দ! আরো একধাপ চড়ে গিয়ে বললাম, আমি ধর্মই মানি না, আজই আমার শেষ মসজিদে আসা। তখন আমার সমর্থনে আর একজনও রইলো না।
আর একটা সুরভি জর্দা পান কৌটো খুলে মুখে দিলো তাবারুক খাঁ।
বলল, আমাকে ঠ্যাঙাবে বলে সবাই আলাপ করতে শুরু করেছে। আমিও ভাবলাম, যাক এতদিনে একটু শান্তিমুক্ত জীবন কাটানো যাবে, কিন্তু কী আর বলি তোমাকে!

আমি বললাম, কেন, এইবার তো আপনার সুসময়।

না রে ভাই, যা ভাবা হয় তার বাইরে কিছু ঘটনা থাকে।
সবাই ঠ্যাঙাবে আমাকে, আমিও কদিন খুব অশান্তিতে থাকব, এটা ভেবেই আমার মধ্যে একটা অদ্ভুত শান্তি এসে হাজির হল। এ হল আজাব —যন্ত্রণা। এই শান্তি থেকে নিজেকে আর বের করতে পারলাম না।

আমাদের পাশে বসেছিলেন এক মৌলানা গোছের ভদ্রলোক। দাড়ি, জোব্বা, চোখে সুরমা। তাকে খেয়াল করিনি। তিনি নিজে থেকেই বললেন, আপনি একেবারে যথার্থ বলেছেন। শান্তি খুব ভালো জিনিস নয় আর পৃথিবীতে মন্দ মানুষের সংখ্যা ভীষণভাবে কমে আসছে। সামনে ভীষণ দুর্দিন।

লোকটা কথায় কথায় 'ভীষণ' শব্দটা ব্যবহার করেন। এটা তেমন কোনো সমস্যা না।

আমি বললাম, আপনার তারিফ?

তিনি বললেন, আমি নানা অনিরাময় যোগ্য রোগের তদবির করি। আমার একটা দাওয়াখানা আছে। তাবিজ, মাদুলি, কবচ —এই হল আমার ওষুধ। বশীকরণে আমার ভীষন সুনাম আছে।
একটু থেমে বললেন, আমি আপনার অশান্তির ব্যবস্থা করে দিতে পারি।

এই শুনে তাবারুক খাঁর মুখ জ্বলজ্বল করে উঠল। সে বলল, দিন তাহলে ব্যবস্থা করে।

লোকটা বললেন, তার জন্য আপনাকে আমার দাওয়াখানায় আসতে হবে। আমি রাস্তাঘাটে চিকিৎসা করি না।
এই বলে একটা ঠিকানা লেখা কার্ড ধরিয়ে দিলেন তিনি তাবারুকের হাতে।
সামনের শুক্রবার চলে আসুন, জুম্মাবার, শুভ —বলে তিনি উঠে চলে গেলেন।

শুক্রবার আমি আর তাবারুক খাঁ মৌলানা গোছের লোকটার দাওয়াখানায় হাজির হলাম। একটা শতরঞ্চি পাতা। একটা ছোট নিচু টুলের ওধারে তিনি বসে আছেন। এধারে আমরা। টুলটা সবুজ চাদরে মোড়া। ঘরের দেয়ালে আরবি নানা অক্ষর। মক্কা মদিনার ছবির ক্যালেন্ডার।

লোকটা বললেন, ৫ হাজার টাকা দিন আর এই নিন তাবিজ। গলায় পরবেন। ৫ দিনের মধ্যে আপনার জীবনে অশান্তি আসবে। গ্যারান্টি। গ্যারান্টি দিয়ে আমি কাজ করি। বিফলে মূল্য ফেরত।

৫ হাজার টাকা!
তাবারুক খাঁ ইতস্তত করছে দেখে তিনি বললেন, কাজ না হলে আমাকে পুলিশে দেবেন। এবার ঠিক আছে?

তাবারুক খাঁ পকেট থেকে দুটো ২ হাজার টাকার নোট আর ২ টো ৫০০ টাকার নোট নিয়ে লোকটার হাতে ধরিয়ে দিল।
—তাবিজটা কখন পরতে হবে?
—আজ রাত ঠিক পৌনে বারোটার সময় নিমপাতা দিয়ে গোসল করে দু দানা চিনি মুখে রেখে এই তাবিজ ধারণ করবেন। দেখবেন যেন শনিবার না হয়ে যায়।
আমরা তাবিজ নিয়ে লোকটাকে সালাম করে উঠে পড়লাম।

৫ দিন পর চায়ের দোকানে তাবারুকের সঙ্গে দেখা। দেখলাম সে খুব রেগে রয়েছে। বলল, আমি ঠকে গিয়েছি, পাঁচ দিন হয়ে গেল কিন্তু মনে এতটুকু অশান্তি নেই। বরং মনটা যেন বড্ড বেশি ঠান্ডা হয়ে এসেছে। আমার ভীষন রাগ হচ্ছে। আমি তাবারুক খাঁ, আমাকে ঠকিয়ে চলে গেল এক মৌলানা!
এইটুকু ছাড়া আমার আর কোনো অশান্তি নেই।

আমি বললাম, তাহলে কী করবে?

সে বলল, লোকটাকে পুলিশে দেবো। কার পাল্লায় পড়েছে সে জানে না।
তার মুখ রাগে আরও লাল হয়ে গেছে।
—তাহলে চলো দাওয়াখানায়?
—নিশ্চয়ই যাবো।

দাওয়াখানায় গিয়ে দেখি ঘর বন্ধ। তালা দেওয়া। এই দেখে তাবারুকের মাথা আরও তেতে উঠল। দরজায় সজোরে সে একটা লাথি মারল। গলার তাবিজটা টেনে ছিঁড়ে ফেলে দিল দূর করে।
সে কিছু একটা করে বসবে বলে মনে হল। রগ চটে উঠলে কিছু একটা করা অসম্ভব না।

তিন দিন পর আবার দাওয়াখানায় গিয়ে পাওয়া গেল লোকটাকে। তাবারুক খাঁ তো তাকে এই মারে কি সেই মারে।
তার হলুদ পাঞ্জাবি ধরে টানতে টানতে থানায় নিয়ে চলল। মাঝপথে লোকটা বলল, জল খাবো। আসলে বলা উচিত জল পান করবো। সে যাকগে, তাবারুক খাঁ বলল, এক ফোঁটা জল তোকে দেব না, আগে থানায় চল।
এত রাগতে তাবারুককে আগে দেখিনি। সে সব সময় হালকা মেজাজে থাকে। আর নানা রকম ফন্দি ফিকির মস্করা করে বেড়ায় । এ যেন অন্য লোক।

লোকটা এবার জোর করে তাবারুক খাঁকে দাঁড় করালো। তারপর বলল, কী জীবনে অশান্তি এসেছে?
—মানে?
—মানে তো ভীষণ সহজ —আমার চিকিৎসা ১০০ ভাগ সফল।

তাবারুক খাঁ কী যেন ভাবল। তারপর বলল, যান আমার চোখের সামনে থেকে। আর কখনও যেন না দেখি। উফ, পৃথিবীতে ভালো মানুষ বলে আর কেউ রইলো না।

অশান্তিকে চিহ্নিত করতে পারলে শান্তি আছে, আবার শান্তিকে চিহ্নিত করতে না পারায়ও অশান্তি রয়েছে। তাবারুক খাঁ সাহেবরা বোঝে না।

জিয়া হক