চিরাচরিতমালা : নিজেকে সমবেদনা : জিয়া হক



 

মাথার ভিতরে কারা হেঁটে বেড়াচ্ছে শব্দ করে। 

সেই শব্দে শব্দে আমি জেগে রয়েছি। 

রাত্রির কাছে আমি দেহী পাখার বিস্তার নয়, দাবি করি ঘুম। 

অনুরোধ শুনতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ কখনও দাবি শুনতে চায় না। 

কষ্ট হতে থাকে। 

কষ্টের কথা ডাক্তার ছাড়া কাউকে বলতে নেই। 

তিনি কষ্ট শোনার দাম নেন, চেষ্টা করেন উপশম করে দেওয়ার। 

মনে মনে খুঁজি সেই লোকটাকে 

যাকে সব কথা খুলে বলা যায় 

এবং যিনি হেফাজত করবেন সেই অসহায় কথামালা। 

কান থেকে কানে, মুখ থেকে মুখে কথারা ভেসে ভেসে সাত সাগর সতেরো নদী পেরিয়ে যায়। 

দশদিক চঞ্চল হয়ে ওঠে, বসে বিচারসভা, এখানে সকলেই জাজ।

লক্ষাধিক রায় বেরোয়। 

আসামির লক্ষবার সাজা হয়। 

সংবিধান চুপ করে থাকে যেন সে  কাজ থেকে অবসরপ্রাপ্ত বুড়ো পিতা, 

সন্তানদের কলহ উদাসীন দেখে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় অবশিষ্ট নেই।

কল্যাণপুরে কল্যাণ থাকে না, 

যেভাবে সংসদে শংসাপত্র হাতে বিষধর মানুষচূর্ণ। 

শক্তি দাও। স্মৃতির শক্তি। 

যদি অতীত ভুলে যাই, আমি যে আমিই তা প্রমাণ করব কীভাবে? 

নিজেকে নিজের কাছে কখনও-সখনও প্রমাণ করতে হয়। 

আত্মপক্ষ সমর্থনের করতে গিয়ে 'আত্ম'বিস্মৃত বোধ করলে মামলা খারিজ হয়ে যায়। 

এই মামলায় হারা মানে শূন্যে গিয়ে দাঁড়ানো। 

সেখানে দাঁড়ানো যায়? ভেসে বেড়ানো যায়। 

যা ওড়ে তা যেমন পাখি নয়, যে ভাসে সে-ই মেঘমালা নয়। 

তার বারিধারা হয়ে ঝরে পড়বার সৌভাগ্য নেই। 

সে সাড়ে তিন হাত ঘুমোতে চায়। 

জায়গা পায়, সহমর্মী গাঁদার আপ্যায়ন পায় না বলে 

রাত্রির কাছে দুপুর আর দুপুরের কাছে রাতের প্রার্থী হয়ে 

হাত তুলে থাকে। 

বিদ্যুতের অসীম জেওরে সাজিয়ে রেখেছে আধা-বৃষ্টির প্রায়ান্ধকার রাত্রির আকাশ। 

দর্শক-শূন্য এই বায়বীয় মাঠের খেলাধুলা। 

প্রতিটি মানুষ নিজস্ব গোয়াল ও খোঁয়াড়ে ঘুমিয়ে পড়েছে পৃথিবী শীতলতর হয়েছে ভেবে। 

তার কথা ভাবি যে সুষম তর্কের পুষ্টি পেতে চেয়ে অাগলবিহীনভাবে কথা বলে যায়। 

প্রতিটি কথায় সে বিস্ময়সূচক চিহ্ন বসায় আর বিস্মিত হতে হতে অবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। 

সে বেঁচে আছে। বাঁচবার প্রণোদনা দেয়। 

সবাইকে সে বর্জন করেছে বলে দাবি করে, তবে জ্ঞাতার্থে জানাই, তার শুভ বিবাহে অন্তত এক হাজার অতিথি দেখেছি। 

রস আছে তাই রসিকতা আছে। 

সন্ন্যাসী রাজা হয়, রাজাও সন্ন্যাসী। 

গানটুকু রয়ে যায়। কে গায় ঐ? 

উচ্চবংশীয় প্রলাপ মধুর। 

বংশ মানে বাঁশ। তার যাত্রা সভ্যতার পায়ুপথ ধরে। 

সিদ্ধান্ত শোনাবে বলে প্রাচীনা আলমারি থেকে বের করো নৈয়ায়িক ধুতি। 

শ্রাবণের দিনগুলো আষাঢ়ের স্মৃতি নিয়ে গর্ববোধ করে কেননা আকাশে নেই বৃষ্টি-উদ্রেককারী মেঘ, 

গত মাসে ছিল। 

Where The Truth Lies

 

..................................................................

I started from a point where no one ever intruded. It is an ultimate nowhere. It is true that people imagined about this point long before but did not entirely or even partially step towards it. This is the point, as elders say, where the very idea of truth lies. It is always moving or shivering as if it will right now explode towards eternity, negate its centre and spread like flame of all grabbing fire. Having a little knowledge about its nature, we incessantly question the fire, 'Where have you come from and to which extent do you want to go or to which direction?' The fire turns into ashes but no answer sprouts out of it. We start looking for the person who first saw this fiery ball. There is no one to accept the fact that he/she has come across this warm, yellow mystery. Truth thus burns in solitude. What happens? We can feel its warmth but cannot see or touch it because we have lost the path to truth or there was never any path to reach the coveted truth. The quest for truth is true and it is also true that a life has not all the answers that can explain or define it unanimously. 


রাখাল ছেলের গল্প : জিয়া হক



রাক্ষসবাড়ি পাহারা দেবার ছলে
ঘুমিয়ে পড়েছে রাখালের কচি খোকা
স্বপ্নে দেখছে মায়ের অট্টালিকায়
স্নেহ ধরে আছে সোনামন থোকা থোকা

পাহাড়ের নিচে শাঁপলা দেশের খুকি
ফুল তোলে আর তাড়া করে প্রজাপতি
পরনে ময়লা ছেঁড়া ছেঁড়া নীল শাড়ি
চোখে জল তার, কে এই দুঃখমতী?

রাখালবালক বাজাবে কি যাদুবাঁশি?
যাবে নাকি ওই নীল মেয়েটির পাশে?
চোখের জল তো হীরের চাইতে দামি
ঝরে যেতে দেওয়া ঠিক নয় বৃথা ঘাসে

হয়ত মেয়ের নাকের গয়নাখানি
হারিয়ে গিয়েছে ঝর্নার বুনো জলে
ফুটে গেছে পায়ে লতাগুল্মের কাঁটা
বালক আসছে একাই সদলবলে

একাকী বালক রাক্ষসপুর দেখে
সে পারবে না বালিকার কাছে যেতে?
গান্ডীবে তার অস্ত্র বলতে বাঁশি
ব্যথা পারবে না ব্যথাকে উদ্ধারিতে?

পুষ্প হাতে আকাশের দেবতারা
ঢেলে দেবে বলে উন্মুখ সারিসারি
নাকফুল তুমি লুকিয়ে কোথায় আছো
পৃথিবীর কাছে তুমি খুব দরকারি

ঘুম ভেঙে যায় খড়ের গাদার নিচে
কোথায় কন্যা, রাক্ষসপুর, বাঁশি
রাখালের গাভী গেছে খাদ্যের খোঁজে
সেও কি হবে না সঙ্গীতে সন্ন্যাসী?

দূরে দেখে তার গাভী নিয়ে এক মেয়ে
ময়লা শাড়ির ছেঁড়া নীল পাড় দাঁতে
এগিয়ে আসছে, এগিয়ে আসছে ধীরে
খুব মিল তার দুঃখমতীর সাথে

কাছে এসে বলে, এই নাও প্রিয় পশু
বারবার বলো খুঁজে দেওয়া সম্ভব?
রাখাল বলল, ভালবাসো মেয়ে গাধা?
আমাকে রাখো না, আমি সেই গর্দভ